উত্তম দত্ত
এক্স / ১
প্রেমিকের
ব্যবহারযোগ্যতা নষ্ট হয়ে গেলে
মাঝরাতে
বৃষ্টি নামে
পাইনবনের
মাথায় পলিথিনের চাঁদ ওঠে
সমস্ত
আলফাবেট হারিয়ে মানুষের হিসেবের খাতায় একটা কাটাকুটি পড়ে থাকে শুধু।
একটা 'X'
এক্স একটা
পুরনো টুথব্রাশের মতো বিপজ্জনক।
অনেক
সঙ্গমঋতু ও প্রিয় মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকা
একটা
বাতিল বেডশিটের মতোই গ্লানিময়।
এক্স একটা
বোবা আর্তনাদ, বালিশের নীচে চেপে রাখা নিষিদ্ধ কান্নার মতো।
এক্স / ২
'X' আসলে
একটা জনশূন্য গোরস্থান
ভৌতিক
জ্যোৎস্নায় সেখানে একাকী দাঁড়ালে
মনে হয় :
এইসব ঘুমন্ত পাখিরা একদিন
ঘর
বেঁধেছিল খড়কুটো মুখে নিয়ে,
রামধনু
রঙের স্বপ্ন দেখেছিল
নিরিবিলি
চোখের পাতায়।
এখন অলীক
সব।
তাদের
বাসি স্বপ্নের উপর দিয়ে এখন অনায়াসে
হেঁটে
যেতে পারে গ্রামীণ সাপেরা।
যে কেউ
আঙুল দেখিয়ে টিটকিরি দিতে পারে।
যেন একটা
গোটা মানুষ সারারাত মাথা নীচু করে
ফেরিঘাট
পার হয়ে চলে গেছে
পুড়ে
যাওয়া বেতসের বনে।
এক্স / ৩
' X '
একটা বিপজ্জনক আলফাবেট।
যেন
যুযুধান দুটি তরবারি। অবিমৃশ্য বালকের কাটাকুটি খেলা -
আত্মঘাতী
জয়ের উল্লাস
অলীক
মুক্তির ভিতরে অনন্ত দহন।
তার
জন্ম-নক্ষত্রের নাম অশ্লেষা-নগরী।
জতুগৃহ
জোডিয়াক সাইন।
বাকি ২৫
টি আলফাবেট
তার
সন্দেহজনক চরিত্র নিয়ে
অনায়াসে আঙুল
তুলে কথা বলতে পারে।
এক্স / ৪
অন্যের
প্রাক্তনকে সকলেই পথে বসাতে চায়।
জুতো ও
জাঙিয়া চুরি করে
ফুটপাতে
একা ফেলে রেখে চলে যায়।
এক
মাইলস্টোন থেকে পরবর্তী মাইলস্টোনের দিকে যেতে যেতে ক্রমশ সে অন্ধ হয়ে যায়,
পুড়ে যায়
পদতল, দুচোখের পাতা।
প্রেমহীন,
পাখিহীন একটা মরা পৃথিবীতে
সারাদিন
একা একা ঢেউ গোনে।
সেই কোন
অরূপনগরে
ভুটিয়াবস্তি
থেকে কেনা শীতবস্ত্র হারিয়ে ফেলার পর
তোমার
লেখায় আর তোমাকে খুঁজে পাচ্ছি না।
নতুন
পাড়ায় কেউ তোমার নামও জানে না।
চারপাশে
চরিত্রহীন শীত
আগ্রাওয়ালিদের
মতো টাল খেয়ে পড়ে আছে পরবর্তী বসন্তের লোভে।
এক্স / ৫
আমাকে কেউ
'X' বলুক আমি চাই না।
বকো,
মারো, যত খুশি প্রাণদণ্ড দাও
থালা
ছুঁড়ে দিয়ে উপোস করিয়ে রাখো সারারাত।
তবু এই
ছেঁড়া পালের দিশাহীন নৌকো ছেড়ে
দু'কামরার
ফ্ল্যাটবাড়ি ছেড়ে
মাঝরাতে
কোথাও যেও না।
থ্যাঁৎলানো
আঙুল দিয়ে
আমি
পুনরায় ধুলোর উপরে লিখে রাখব
তোমার
মুখ।
কেউ
তোমাকে প্রাক্তনী বললে তার টুঁটি ছিঁড়ে
মর্গে
পাঠাব।
Post a Comment