অভিজিৎ বেরা
গন্ধ
নারীর গন্ধ ভাল, সাবানের মত
যত মাখি থেকে যায় দুঘণ্টার মত।
তবু সেই
সামান্য সাবানস্মৃতি ফিরে ফিরে আসে
কানের লতির ফাঁকে আঠা লেগে থাকে
ঘষে ঘষে তুলি
প্রতিটি ঘর্ষণে
প্রিয় নারীটির বডি
চোখে ভেসে ওঠে।
ডালা খুলে শুঁকি
গুঁড়ো সাবানের মত বরফের কুচি
বাহুসন্ধি ঘাড়ে
দুহাতে খামচে ধরি,
এ শরীর রোমরোম চেনে।
তবু স্থানীয় সাবান যেন অল্প স্টে করে
বাড়ি ফিরে জামা শুঁকে দেখি
প্রবল শবের গন্ধ
প্রিয় নারী চলে গেছে দূরে !
নারীর গন্ধ ভাল, সাবানের মত
যত মাখি থেকে যায় দুঘণ্টার মত।
তবু সেই
সামান্য সাবানস্মৃতি ফিরে ফিরে আসে
কানের লতির ফাঁকে আঠা লেগে থাকে
ঘষে ঘষে তুলি
প্রতিটি ঘর্ষণে
প্রিয় নারীটির বডি
চোখে ভেসে ওঠে।
ডালা খুলে শুঁকি
গুঁড়ো সাবানের মত বরফের কুচি
বাহুসন্ধি ঘাড়ে
দুহাতে খামচে ধরি,
এ শরীর রোমরোম চেনে।
তবু স্থানীয় সাবান যেন অল্প স্টে করে
বাড়ি ফিরে জামা শুঁকে দেখি
প্রবল শবের গন্ধ
প্রিয় নারী চলে গেছে দূরে !
নৈশ শিকারের গল্প
গল্পে দারোগা একটি ঘোড়া ছিল।
তার নীল চোখ,কপালে লোমশ শিং
ঘাড়ের নরম কেশর পিঠেতে লুটিয়ে পড়ে
কুয়াশায় ঘ্রিক ঘ্রিক ডাকে
অরণ্যে কাঠ কাটে গুপ্ত শিকারীরা
আট ব্যাটারির আলো—
ফাঁকে ফাঁকে ঝিকিমিকি করে।
সফেদ ঘোড়াটিকে মায়া-হুর লাগে
দীর্ঘ সাভান্না ঘাসে মাংসের আদিম ঘ্রাণ...
অস্ত্রকে পাগল করে।
নদীটি খরস্রোতা—
চুরি করা কাঠ,মাংস,দাঁত এ-পথে শহরে যায়।
মৃতদের শোকে অরণ্যে কলরব—
কর্ণ ছাপিয়ে এসে
ঘুমের ব্যাঘাত ডাকে।
পাছে দারোগা ধরে ফেলে তাকে...
বখরা বুঝে নিয়ে রক্ষী পালায়
থেকে থেকে মনে পড়ে
নীল-ঘোড়া-চক্ষুটি
চেয়েছিল তার দিকে অপলক
কী যে ছিল সে দৃষ্টিতে কী !
ঘোড়া ছিল গল্পে দারোগাটি !
ভাঁড়ারে হত্যা দৃশ্য
শুকনো দুপুর-কাল।গৃহস্থের ভাঁড়ার ঘরে
ঢুকে পড়ে কাক।
থরে থরে ছোলা,ডাল, মুড়ি।
ছোট্ট ডিমের মাথা উন্মাদ লাগে
চোখের ভেতরে দানা কিলবিল করে
নখে নখে চঞ্চু উপড়ে ফেলে—
ফুঁড়ে দেয় চোখে।
ঘোলাটে কাকের চোখ প্রখর দুপুর তাপে
দেখে আঁধার নেমেছে যেন
শস্যের বিস্তীর্ন মাঠে।
ছায়া ছায়া মানুষেরা পাহারায় আছে
হাতে ছোট লাঠি
ছুঁড়ে মারে।
অন্ধ কাক ভাবে—
আকাশ হতে বুঝি
শস্যডাল পড়ে!
গোধূলিতে গৃহস্থের ভৃত্যটি
মন্দমুখ করে
বিকেল বিকেল কে
মাংস ছাড়াতে বসে?
কাকগুলি ঘিরে ধরে
সে চামড়া চঞ্চু চোখ
দূরে ছুঁড়ে মারে...
স্বপ্ন
স্বপ্নের ভেতর ছোট ছোট ছেলেমেয়ে লুকোচুরি খেলে
কুয়াশায়।
শ্যাওলা রঙের গা
একে অন্যের কানে কী এক গোপন কথা ঢেলে
খিলখিল হাসে।
তুই তবে বুড়ি
উবু দশ কুড়ি...
কে লুকোল নির্জনে,পাতায়?
খাঁড়ির ভেতরে কে?
নীলাভ চোখে দেখে—
জ্যোৎস্নায় কাগজের ডিঙি
সাদা সাদা পাখি, ফুল
শিশুগুলি চাঁদমালা...
যেই ধাপ্পা দেয়—
অমনি পুতুল।
বালিকাটি বসে থাকে, ছড়ানো পুতুলে
সাদা মৃত চোখে ওকে দেখে
দুটি শোকার্ত চোখ টলটলে।
জ্যোৎস্নার রেণু নামে দিকে দিকে
নিশি ডাকে দূরে
শোক মাটি স্পর্শ করে।
অমনি খিলখিল জেগে ওঠে পুতুলেরা
বালিকাটি হাসে...।
আমার কী কাজ আর
স্বপ্ন মগজে পুরে জেগে উঠি
দেখি স্বপ্নের পুতুল এক সম্মুখে বসে!
যে কিশোরী পাতায় লুকিয়ে ছিল—
থেকে গেছে স্বপ্নের বাহিরে।
মায়া
জমির ভেতর পা ঢুকে আছে
সে জানে এ মায়া—
এ তার ছিল না কখনো
এ কেঁচোর, মেঠো ইঁদুরের
চন্দন গুঁড়ির মত মাটি মাখে গায়ে
পা মাটিতে আরেকটু যায়।
কারা যেন কঁকিয়ে কঁকিয়ে কাঁদে
না ফোটা শীষের দুঃখ—
মুঠিতে নীল হয়ে আছে।
সে আরও ঢোকে—
বাইরে কেবল তার কাকের চেহারা
প্রান্তরে ঋষি নক্ষত্র ঝরে
দুচোখে কান্না ছাপিয়ে আসে। এত মোহ! মায়া!
মাটিতে পুরোটা ঢুকে সে দেখে—
এ জায়গা সে চেনে
এখান থেকেই তো—
এক বরষা রাতে
দুঃখিনী মায়ের কোলে
তার জন্মাতে যাওয়া।
বেদি ফুলে ফুলে শাদা।
নিজের গোর দেখিয়ে
নাতিকে সে বলে—
এসব পুরনো ঘটনা !
জমির ভেতর পা ঢুকে আছে
সে জানে এ মায়া—
এ তার ছিল না কখনো
এ কেঁচোর, মেঠো ইঁদুরের
চন্দন গুঁড়ির মত মাটি মাখে গায়ে
পা মাটিতে আরেকটু যায়।
কারা যেন কঁকিয়ে কঁকিয়ে কাঁদে
না ফোটা শীষের দুঃখ—
মুঠিতে নীল হয়ে আছে।
সে আরও ঢোকে—
বাইরে কেবল তার কাকের চেহারা
প্রান্তরে ঋষি নক্ষত্র ঝরে
দুচোখে কান্না ছাপিয়ে আসে। এত মোহ! মায়া!
মাটিতে পুরোটা ঢুকে সে দেখে—
এ জায়গা সে চেনে
এখান থেকেই তো—
এক বরষা রাতে
দুঃখিনী মায়ের কোলে
তার জন্মাতে যাওয়া।
বেদি ফুলে ফুলে শাদা।
নিজের গোর দেখিয়ে
নাতিকে সে বলে—
এসব পুরনো ঘটনা !
Post a Comment